Tags: adnan tasin
“সড়কে মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হত্যাকান্ডের বিচারহীনতার ২ বছর”
সড়কে মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন সহ সড়কে সকল হত্যাকান্ডের বিচার-
দূর্ঘটনা নামের আড়ালে সড়কহত্যা বন্ধ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন
১১ই ফেব্রæয়ারী ২০২১ ইং, বৃহস্পতিবার সকাল ১০.৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামেনে “সড়কে সন্তান স্বজনহারা পরিবার ফোরাম” এর উদ্যোগে “সড়কে মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হত্যাকান্ডের বিচারহীনতার ২ বছর” সড়কে মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন সহ সড়কে সকল হত্যাকান্ডের বিচার, দূর্ঘটনা নামের আড়ালে সড়কহত্যা বন্ধ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য ১১ই ফেব্রæয়ারী ২০১৯ ইং সোমবার দুপুর ২টা’র দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর “সেন্ট যোসেফ কলেজ” থেকে বাসায় ফেরার পথে বিমানবন্দর সড়ক বাসষ্ট্যান্ড জেব্রাক্রসিং দিয়ে রাস্তা পার হবার সময়ে ভ্রাম্মনবাড়িয়াগামী “উত্তরা পরিবহন (ঢাকা মেট্রো ১১ ৪৫৮৪) বেপোরয়া বাস মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিনকে শিক্ষার্থী পোষাকে দেখে ২০১৮ সালের রমিজুদ্দিন কলেজ দীয়া-করিম শিক্ষার্থী আন্দোলনের প্রতিহিংসা আক্রোশ ক্রোধ এর বশবর্তী হয়ে তাকে জেব্রাক্রসিং এর উপর চাকায় পিষ্ট করে নিমর্মভাবে হত্যা করে । উল্লেখ্য এই স্থানে একটি ফুটোভারব্রীজ ছিলো- ২০১৮ সালের রমিজুদ্দিন কলেজ দীয়া-করিম শিক্ষার্থী আন্দোলনের পর কোন বিকল্প না করে এত ব্যাস্ত সড়ক থেকে ফুটোভারব্রীজ অপসারন করে , সড়কের মাঝে ডিভাইডার ছিলো- ফুটোভারব্রীজ অপসারন করে সড়কের মাঝের ডিভাইডার আংশিক তুলে সেখানে সাদা রং দিয়ে আলপনা মৃত্যুফাঁদ জেব্রাক্রসিং আঁকা হয়। বিমানবন্দরের মত এত ব্যাস্ত সড়ক কেন, সড়কের মাঝে ডিভাইডার ও ফুটোভারব্রীজ অপসারন করে জেব্রাক্রসিং? সামনে পিছে কোন স্পীড ব্রেকার নেই-ট্রাফিক নেই-সিগন্যাল নেই। আইন আছে জেব্রাক্রসিং দিয়ে পথচারী পার না হলে জরিমানা-কিন্ত জেব্রাক্রসিং দিয়ে পথচারী পার হতে গিয়ে হত্যাকান্ডের শিকার হলে দায় কার? পরিবহন চালকরা কি জানে জেব্রাক্রসিং কি?
রাস্ট্রসমাজের পাতা ফাঁদে সড়ক হত্যাকান্ডের শিকার, শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হত্যাকান্ডের ২ বছর অতিবাহিত হতে যাচ্ছে, কোন বিচার নেই ! এখনো হত্যাকারী ঘাতকে ধরা হয়নি, বাসের হেলপারকে আসামীও করা হয়নি। বরং মামলার বাদী পুলিশ আদালতে তদন্ত রির্পোট পরিবর্তন করে-সেখানে উল্লেখ করেন শিক্ষার্থী আদনান তাসিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরন করে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা,
প্রকৃতসত্য হচ্ছে, পথচারীরা মূমর্শ অবস্থায় শিক্ষার্থী আদনান তাসিনকে স্থানীয় সরকারী কুর্মিটোলা হাসপাতালে নিলে সেখানকার দায়ীত্বপ্রাপ্ত লোকজন পথচারীদের বলেন, হাসপাতালে সড়কের কোন মূমর্শ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়না, আপনারা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান, ঝামেলা এড়াতে পথচারীরা মূমর্শ শিক্ষার্থী আদনান তাসিনকে সরকারী কুর্মিটোলা হাসপাতালের জরুরী বিভাগের বারান্ধায় রেখে চলে যায়, তার আর্তচিৎকার কারো মনেই দাগ কাটেনি, শিক্ষার্থী আদনান তাসিনের এই পরিনতি তার পরিবাররা জানেন না, তারা প্লেটে ভাত নিয়ে সন্তানের আসার প্রহর গুনছে, বিলম্ব দেখে ফোন করে খোজাখুজির পর জানতে পারে তাদের আদরের প্রানপ্রিয় সন্তান সরকারী হাসপাতালের বারান্ধায় বিনা চিকিৎসায় কস্ট পানির পিপাসা আসহায় ব্ওেয়ারিশ হিসাবে মৃত্যুর পথযাত্রী ।
প্রায় ঘন্টা খানেক পর অভাগা শিক্ষার্থী আদনান তাসিনের পরিবারের সদস্য হাসপাতালের বারান্ধায় পরিত্যাক্ত পন্যর মত পড়ে থাকা শিক্ষার্থী আদনান তাসিনকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে, কিন্ত বিমানবন্দর সড়ক ষ্টাফ রোড রেল ক্রসিং ফ্ল্ইাওভার থেকে বনানী ১১ নম্বর সড়ক পযর্ন্ত তীব্র যানযট, ক্রমশই মূমর্শ শিক্ষার্থী আদনান তাসিনের অবস্থার অবনতি হতে থাকে,
যদি স্থানীয় সরকারী কুর্মিটোলা হাসপাতাল করুনা করে হলেও যদি অন্তত অক্্িরজেনের ব্যবস্থা করে দিত তবে অস্তত কস্টটা কম হত, হযত প্রানে বেঁচে যেত । অবস্থার অবনতি দেখে গাড়ি বনানী কবরস্থান রোডের কাছ থেকে ঘুরিয়ে, ঢাকা সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয়, সেখাকে কতর্ব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন, মৃত্যু সনদ এ লালরং এর কালিতে লিখেন, “রিসভি ডেড বডি”
মামলার বাদী পুলিশ আদালতে মামলা থেকে বাসের মালিক, বাসের পরিচালককে অব্যাহতি প্রদানের জন্য তদন্ত রির্পোটে আবেদন করেন। উল্লেখ্য হত্যাকান্ডের ঘাতক চালক বাসটি ফেলে চলে গেলে পরবর্তিতে বাসে মালিক এসে বাসটি নিয়ে যায়। পুলিশের অসত্য তদন্ত রির্পোটের বিরোদ্ধে এ্যাডভোকেট রোজাউল করিম একটি না-রাজি জমা দিলে, সেই না-রাজি গ্রহন করা হয়নি।
মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিনের বাবা পোশাক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় ২০১৭ থেকে জিবিএস ভাইরাসে পুরো শরীর প্যারালাইসি হয়ে শয্যাশায়ী ছিলেন, দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে এখন হালকা চলা ফেরা করতে পারেন- তবে এখনো শরীরের ভারসাম্য আসেনি। মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন ১৭ বছর জীবনে কৃতিত্বের জন্য শতাধীক ম্যাডেল, ট্রফি, অসংখ্যা সনদ অর্জন করে, কিন্ত অভাগা, হতভাগ্য, আদনান তাসিন! সে বাচঁতে পারলো না, চিকিৎসা পেলো না, সহানুভুতি পেলো না, আলোচিত হলো না বলে বিচারও পেলো না ।
দেশে দূর্ঘটনা নামের আড়ালে বছরে মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিনের মত হাজার হাজার সাধারন মানুষ সড়কে অবাধ হত্যাকান্ডের শিকার হলেও, হত্যাকারীদের ধরা হয়না, বিচার হয়না, ২০১৮ সালে ”পরিবহন আইন” সংসদে পাশ করা হল্ওে আজৌ আইনটি কার্যকর করা হয়নি ।
বিচারহীনতার অনুপ্রেরনায় সড়কে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে, থেমে যাচ্ছে সম্ভাবনাময় আগামীর স্বপ্ন, ২০১৮ সালের রমিজ উদ্দিন কলেজ শিক্ষার্থী দীয়া-করিম হত্যাকান্ডের প্রতিবাদের পর সড়কে নিরীহ শিক্ষার্থীরাই বেশী পরিবহন সেক্টরের শিকারে পরিনত হচ্ছে। দীয়া-করিম হত্যাকান্ডের পরপরই ঘাতকের হত্যাকান্ডের শিকার কয়েকজন শিক্ষার্থী যেমন: সিলেটে কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ের শিকার্থী ওয়াসিম- সাভারে চট্টগ্রাম পলিটেনিক শিক্ষার্থী শিল্পি- গাজিপুর সালাহউদ্দিন- ভ্রাম্মনবাড়িয়ায় আশিক, চট্টগ্রামে জিইসিতে জসিম উদ্দিন, চট্টগ্রামে সিটি গেইট রেজাউর করিম, পাবনা ইশ^নদি সুমন হোসেন- কে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে চাকায় পিষ্ঠ করে হত্যা করে,
সেন্ট যোসেফ এর মেধাবী শিক্ষার্থী আদনান তাসিন কে ২০১৮ সালের রমিজ উদ্দিন কলেজ শিক্ষার্থী দীয়া-করিম হত্যাকান্ডের স্থানে জেব্রা ক্রসিং এর উপর চাকায় পিষ্ঠ করে হত্যা করে, বনশ্রী আইডিয়াল স্কুল ছাত্রী ইসরাত জাহান ¯েœহা, মিরপুরে পাইকপাড়া স্টাফ কোয়ার্টার ৮ বছরের শিক্ষার্থী মাঠে খেলার সময়ে বাস মাঠে ঢুকে আলিফকে চাপা দিয়ে হত্যা করে, উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল ছাত্রী ফাইজা তাহসিনা ফাইজা, ফার্মগেইটে সিভিল এভিয়েশন স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী তানজিলা,মিরপুর নাহার একাডেমির সাব্বির, ওয়ারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আবির, ঢাকার মিলেনিয়াম ইউনিভার্সিটির এমবিএ’র শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার, জান্নাত, আকিব ও সাদিয়ার স্বামী ইকরাম মিয়া, লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র জিহাদুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের ছাত্র আকিব রেজা,বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস টেকনোলজির ছাত্র মো. তাওহীদুল ইসলাম,
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারহানা ইসলাম তানিয়া, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র শান্ত হোসেন, নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাকিব চৌধুরী তুর্যও সাকিব কাজী শেহজাদ হক সাম্য, চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফরিদুলের মসজিদে গাড়ি ঢুকে চাপায় দিলে মৃত্যু হয়েছে নামাজরত অবস্থায়, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী জারিন জাহরা, প্রিমিয়াম ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাজ্জাদ, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ফাহমিদা হক লাবণ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নুসরাত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুলহাস জীম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের ছাত্র আবরার আহমেদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাদেকুল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী মিলু রান,
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ফরহাত লামিয়া, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সানি, কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাজ্জাদ, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুমাইয়া, রাজধানীর খিলগাঁওয়ে স্কুলছাত্র নাফিউল ইসলাম নাফিজ –এমন শতশত নজির থাকল্ওে হত্যাকারী ঘাতকদেও ধরা হলনা, সকল সংবাদের শেষ লাইনে লিখা থাকে, “ঘাতক চালক / হেলপারকে ধরা সম্ভব হয়নি” বা “ঘাতক চালক / হেলপার পালিয়ে গেছে।
অবাধ সড়ক হত্যাকান্ড বন্ধ করতে সাংবাদিক,ছাত্র, শ্রমিক, জনতা, আইনজিবি, পেশাজিবি সুশীল সমাজের ঐক্যের বিকল্প নেই, আসুন দূঘর্টনা নামের আড়ালে সড়কহত্যা বন্ধে এগিয়ে আসুন।