Tags: গোপালগঞ্জে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে জ্বলছে কাঠ, রমরমা ব্যবসা করছে স্টার ব্রিকস্
[২] গোপালগঞ্জে দিনকে দিন বাড়ছে ইটভাটা। অবৈধ স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাটায় অবাধে পুড়ছে কাঠ। সরকারি ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন না মেনে যত্রতত্র গড়ে ওঠা এসব ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ বা কাঠের গুঁড়ি। ভাটার নির্গত কালো ধোঁয়া দূষিত করছে চারপাশের পরিবেশ। এতে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ওষধিসহ বিভিন্ন সবুজ বৃক্ষ। বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলি জমি, পরিবেশ দূষণের ফলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী শিশুসহ অধিকাংশ মানুষ।
[৩] গোপালগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় প্রায় দেড় শতাধিক ইটভাটা রয়েছে। সরকারি নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে গোপালগঞ্জে বিভিন্ন আবাদি জমি, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার পাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক ইটভাটা।
[৪] সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার চরপুখরিয়া এলাকায় এক কিলোমিটারের মধ্যে স্থাপন করা হয়েছে দুই থেকে তিনটি করে ইটভাটা। এর মধ্যে মেসার্স স্টার ব্রিকস্, মেসার্স হাসেম ব্রিকস্, মেসার্স লালপরী ব্রিকস্, মেসার্স ম্যাক্স ব্রিকস এ্যান্ড ইন্ড্রাষ্ট্রি ও মেসার্স এম আর বি ব্রিকসে ভাটায় কয়লার পরিবর্তে ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গাছ। ফলদ, বনজ ও ওষধি গছের কাঠ পুড়িয়ে অবাধে তৈরি করা হচ্ছে ইট।
[৫] প্রতিদিন পুড়ছে শত শত মেট্রিক টন কাঠ। ফলে, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তাঘাট, কৃষিখাত, উজাড় হচ্ছে বনভূমি, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। সরকারি বিধিনিষেধ তোয়াক্কা না করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন এসব ভাটার মালিকেরা। কিছু ভাটায় গাছ কাটার জন্য সোয়ামিল ও ডিজেল চালিত করাত কলও স্থাপন করে নিয়েছে ভাটা মালিকেরা। যার নেই কোন বৈধ্যতা।
[৭] ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান পরিচালনা করে ভাটাগুলো বন্ধ করে দিলেও মালিকেরা আবারো গড়ে তুলছে এই অবৈধ্য স্থাপনাগুলো।
[৮] ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী কৃষি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতি এলাকায় ভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিবছর আবাদি জমিতে তৈরি হচ্ছে অসংখ্য ইটভাটা। ইট তৈরির মাটিও সংগ্রহ করা হচ্ছে, এসব জমি থেকে। এছাড়া ভাটায় গাছ পোড়ানোর ফলে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়ছে কৃষিখাত। ভাটায় আবার ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে ৭ থেকে ১০ বছরের শিশু শ্রমিক। অন্যদিকে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
[৯] স্থানীয়রা জানায়, প্রতিনিয়ত কাঠ কেটে ইটভাটায় নিয়ে আসার ফলে গ্রামে দিন দিন কমে যাচ্ছে গাছপালা। এতে পরিবেশ হুমকির মুখে পতিত হচ্ছে। ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কবলে পড়ছে গ্রামের হাজার হাজার লোকজন। বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করলেও নিয়ম মানছে না ভাটা মালিকরা।
[১০] কাঠ পোড়ানোর বিষয়ে মেসার্স স্টার ব্রিকসের মালিক মো. মুজাহিদ শেখ ও মেসার্স হাসেম ব্রিকসের মালিক মুরাদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তারা বিষয়টি এড়িয়েযান।
[১১] পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ সকল অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।