তাসিনের বাবা আহসান উল্লাহ বলেন, ‘মামলাটির ব্যাপারে যতটা ফাঁকফোকর রাখা যায়, তা রেখে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। জব্দ করা বাসটি মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
পুলিশের অভিযোগপত্রে চালক হিসাবে জাকিরের ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের গাবচালা গ্রাম। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সেখানে যান প্রথম আলোর গাজীপুর প্রতিনিধি। জাকিরের বাবা বিল্লাল হোসেন ওরফে কানা বিল্লাল দাবি করেন, বাস দুর্ঘটনার পর থেকে তাঁর ছেলে আর বাড়িতে আসেননি। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা ধইরা নিছি ও মইরা গেছে। পরিচয় না পাইয়া হয়তো কেউ দাফন কইরা ফালাইছে।’
জাকিরদের বাড়ির আশপাশে একাধিক বাসিন্দা জানান, জাকিরকে হঠাৎ হঠাৎ এলাকায় দেখা যায়।
আহসান উল্লাহ জানান, ছেলের মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ (ডিএমপি) ১৬টি জায়গায় চিঠি পাঠিয়েছেন। ১০টি মানববন্ধন করেছেন। গত বছরের মার্চের একটি মানববন্ধনে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ইলিয়াস কাঞ্চন অংশ নেন।
তাসিনের মামলার বিষয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম আলোকে বলেন, পরিবহন শ্রমিক নেতারা সরকারকে প্রভাবিত করে বলে সড়ক দুর্ঘটনা কমছে না। বিরোধী দলে যাঁরা থাকেন, তাঁরাও পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কথা বলেন না। পরিকল্পনা নিয়ে না এগোলে সড়কে কখনো শৃঙ্খলা আসবে না।
রাজধানীর বারিধারাসংলগ্ন নদ্দার জোয়ার সাহারা বাজার এলাকায় অলিপাড়ায় স্ত্রী শাহিদা আক্তার ও বড় ছেলে রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আদনান সামিনকে নিয়ে বসবাস করেন আহসান উল্লাহ। একটি পোশাক কারখানায় তিনি সোর্সিং ও মার্চেন্ডাইজিং ব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরি করতেন। ২০১৭ সালে জিবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। এখন কিছুটা চলাচল করতে পারলেও পুরোপুরি সুস্থ নন।
আক্ষেপের সুরে তাসিনের বাবা বলেন, ‘সন্তান হারানোর কষ্ট একই। আমার তাসিনের জন্য তো কেউ এসে দাঁড়াল না! কেউ বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করল না!’